সুশ্বেতা ভট্টাচার্য
এমনিতেই প্রার্থী প্রিয়ঙ্কার মেন্টর বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় ভবানীপুর কেন্দ্রের বিজেপি কর্মীদের মনোবল তলানিতে। তার উপর দলবেঁধে শতাধিক পোলিং এজেন্ট, যাঁরা বুথে বসবেন বলে চূড়ান্ত হয়েছিল, তাঁরাও তৃণমূলে চলে গেলেন।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট ভবানীপুরের। তার আগে, মঙ্গলবার বড়সড় ভাঙন ভবানীপুরের গেরুয়া শিবিরে। উপনির্বাচনে বিভিন্ন বুথে পোলিং এজেন্ট হিসেবে যাঁদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল, বিজেপিতে ধস নামিয়ে সেই শতাধিক নেতা কর্মী শিবির বদল করলেন। তৃণমূলের দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি ও বিধায়ক দেবাশিস কুমারের হাত ধরে ঘাসফুলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে আয়োজিত প্রচার মঞ্চে জোড়া ফুলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন তাঁরা। স্লোগান তুললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ, তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ।” একইসঙ্গে কার্যত জেহাদ ঘোষণা করলেন বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে।
চক্রবেরিয়া ত্রিকোণ পার্কের ওই সভায় তৃণমূলে যোগ দিলেন অ্যাঙ্কার পারিজাত চক্রবর্তী, ভবানীপুর ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি সভাপতি ওমপ্রকাশ গুপ্তা, সাহিদ খান, বীরেন্দ্র পান্ডে, সৌভিক ব্যানার্জি, খোকন ঘোষ, সোনু সিং, ধনঞ্জয় শর্মা প্রমুখ।
প্রায়শ্চিত্ত করতেই এই দলবদল বলে জানালেন এলাকায় বিজেপির প্রভাবশালী নেতা বলে পরিচিত ওমপ্রকাশ গুপ্তা, ধনঞ্জয় শর্মারা। তাঁরা বলেন, “বিধানসভা ভোটের আগে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও ক্ষমতার অলীক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু কোভিডের সময় দেখেছি, বাংলায় মমতাদির দল ছাড়া অন্য কেউ পাশে নেই। এবার সবাই দিদিকে ১০০ শতাংশ ভোট দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করব।”
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটে ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জয়ী হলেও পুরসভার ৭০ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী রুদ্রনীল ঘোষ। কিন্তু এবার সব ওয়ার্ড থেকেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরঙ্কুশ জয় চায় ঘাসফুল শিবির। তাই এই দুই ওয়ার্ডে বিশেষ নজর দিয়েছেন তৃণমূলের ভোট সেনাপতিরা।
৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর অসীম বসু বলেন, “এই ওয়ার্ডে গত বিধানসভা নির্বাচনে দু’হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলাম। সেই ঘাটতি মিটিয়ে এবার পাঁচ হাজারে লিড দেওয়ার টার্গেট নিয়ে মানুষের দরজায় যাচ্ছি।” নেত্রীর জয় নিশ্চিত করে বিজেপিকে সমূলে উৎখাত করার লক্ষ্যে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালাচ্ছেন দেবাশিস কুমার নিজে। এদিন তিনি বলেন, “এবার ভোটের দিন গতবার জেতা দুই ওয়ার্ডের অধিকাংশ বুথে এজেন্ট বসানোর লোকই খুঁজে পাবে না বিজেপি।” প্রচার সভায় ছিলেন সাংসদ মালা রায়, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বুধবার থেকে নিজের প্রচারে ভবানীপুরের পরপর পাঁচটি সভা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি সব করবেন একবালপুরে এবং চেতলার অহীন্দ্র মঞ্চে।