ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে কার্যত নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছিল কল্লোলিনী তিলোত্তমা। সালটা ১৮৩৬-এর ১০ জানুয়ারি, গোটা দেশের মধ্যে কলকাতা শহরের বুকে প্রথম শবদেহ ব্যবচ্ছেদ হয়েছিল।
ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানে কার্যত নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছিল কল্লোলিনী তিলোত্তমা। সালটা ১৮৩৬-এর ১০ জানুয়ারি, গোটা দেশের মধ্যে কলকাতা শহরের বুকে প্রথম শবদেহ ব্যবচ্ছেদ হয়েছিল। এই যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজের বাঙালি চিকিৎসক মদুসূদন গুপ্ত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চিকিৎসক রাজকৃষ্ণ দে, উমাচরণ শেঠ, দ্বারকানাথ গুপ্ত ও নবীনচন্দ্র মিত্র।
ওই দিন ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে কার্যত তিলধারণের জায়গা ছিল না। বাধ্য হয়ে সমস্ত গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তবে যতটা সহজ শুনতে মনে হচ্ছে, পরিস্থিতিটা ততটা সহজ ছিল না। বাল্যবিবাহ, সতীদাহ প্রথা তখনও প্রচলিত। রক্ষণশীল হিন্দু সমাজ অন্ধকারের চক্রবুহ্যের মধ্যে আবদ্ধ। সেই দিন এই প্রথম শব ব্যবচ্ছেদকে ভালো চোখে নেয়নি তৎকালীন হিন্দু সমাজ।
প্রথম শব ব্যবচ্ছেদের কাজ সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পঞ্চাশ রাউন্ড তোপ ফাটিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়েছিল চিকিৎসকদের। বাঙালি চিকিৎসক মধুসূদন গুপ্ত ইতিহাস রচনা করেছিলেন ওই দিন। এমনকী, বাংলা ভাষায় ক্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ানোর সূচনাও হয়েছিল তাঁরই হাত ধরে।
১৮৫৩ সালে মধুসূদন গুপ্তের লেখা ‘এনাটমি’ বইটিকে এখনও চিকিৎসা শাস্ত্রের পথিকৃৎ হিসেবে ধরা হয়।